Wednesday, May 13, 2015

আত্মমর্যাদাবিহীন একদল পেশাদার বুদ্ধিজীবী বর্তমানের বাংলাদেশে টিকে আছে ...

Source LINK  ...
আত্মমর্যাদাবিহীন একদল পেশাদার বুদ্ধিজীবী বর্তমানের বাংলাদেশে টিকে আছে। 

C/O, https://www.facebook.com/rasel.pervez
হঠাৎ করে একদিন আনিসুক হকের সাথে দেখা হলো। তাকে বললাম গদ্যকার্টুন ধর্ম অবমাননা ইস্যুতে বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার সিদ্ধান্তটা ভুল ছিলো। তিনি বললেন বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে বাক-স্বাধীনতা শিল্পীর স্বাধীনতা এই ধরণের গোয়ার্তুমি করলে ঘাড়ে মাথা রাখা কঠিন। আগে বেঁচে থাকতে হবে।
এভাবে ক্ষমা চাইলে অদ্ভুত মানসিকতার মানুষেরা প্রশ্রয় পায়- তারা আরও অনেক বেশী বশ্যতা দাবী করে। বাংলাদেশের ধর্মভীরু মানুষেরা ঘাড়ে কোপ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ নির্মাণের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এখন। অপরাপর ধর্মপ্রবন মানুষেরা এই অপরাধকে মৌন-প্রকাশ্য সমর্থন দিচ্ছে। ভয়ংকর অপরাধ করেও যখন কেউ বাহবা পায়, যখন তার অপরাধকে অবজ্ঞা করা হয় কিংবা অপরাধের গুরুত্ব কমানোর জন্যে ইনিয়ে বিনিয়ে বিভিন্ন ধরণের যুক্তি তুলে ধরা হয়- আরও অনেকগুলো একই ধরণের অপরাধের সম্ভাবনা বাড়ে।
ভোটের রাজনীতির বিভিন্ন ধরণের অংক মেলাতে ক্ষমতাসীন দল মদীনা সনদ, কোরান সুন্নাহ-র দোহাই দিচ্ছে, হাতে তসবিহ, মাথায় হিজাব দিয়ে রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার এবং ধর্মীয় সহিংসতার ক্ষেত্র তৈরী করছে। আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা এবং আওয়ামী লীগের রাখাল হয়ে থাকা কিছুটা বামপন্থী নেতা কর্মী সমর্থকেরা মেজর শরিফুজ্জামান ডালিমকে গালি দিচ্ছে কেনো সে ইসলামিক রিপাবলিক অফ বাংলাদেশ বলেছিলো ১৫ই আগস্টের বেতার ভাষণে।
বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলনের সম্পূর্ণ সময়টাতে শেখ মুজিবুর রহমান বুদ্ধিজীবী-গবেষকদের সাথে আলোচনা করেছেন, তাদের মতামত শুনেছেন। বুদ্ধিজীবীদের সুচিন্তিত মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক আন্দোলন নির্মাণ করেছে। কিভাবে বঞ্চিত, লুণ্ঠিত বাংলাদেশ স্বাধীকার পেলে সকল নাগরিকের স্বপ্নের স্বদেশ হয়ে উঠবে জনগণকে তার রূপরেখা দিয়েছেন। জনগণ শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন-আকাঙ্খা বিশ্বাস করেছে, তার উপরে আস্থা রেখেছে। স্বাধীকার আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান কিন্তু বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ, অনুগত আন্তরিক কর্মীবাহিনী এবং নিঃস্বার্থ গণনেতারা তার ক্ষেত্র গড়ে দিয়েছে।
আমাদের বর্তমানের পরিস্থিতি ভিন্ন, এখন বুদ্ধিজীবীরা রাজনৈতিক দলের অনুগ্রহ চেয়ে তাদের নেতা কর্মী সমর্থকদের কাছে ধর্ণা দেন। পদোন্নতি, ব্যক্তিগত সুযোগ সুবিধার জন্যে তাদের তোয়াজ করে চলেন। আত্মমর্যাদাবিহীন একদল পেশাদার বুদ্ধিজীবী বর্তমানের বাংলাদেশে টিকে আছে। 
আমাদের বুদ্ধিজীবীরা যেদিন নিজের আত্মমর্যাদাবোধ খুঁজে পাবেন, যেদিন উপলব্ধি করবেন ভবিষ্যতের রাষ্ট্র নির্মাণ, নাগরিক আকাঙ্খা পুরণের জন্যে রাষ্ট্র নিজ উদ্যোগে বুদ্ধিজীবীদের কাছে আসবে, রাষ্ট্রের প্রয়োজন পুরণে রাজনীতিবিদগণ বুদ্ধিজীবীদের সহযোগিতা নিতে বাধ্য- তখন হয়তো তারা ছ্যাচ্চোর নেতাদের তোয়াজ করা বাদ দিয়ে মাথা উঁচু করে বুদ্ধিবৃত্তি চর্চায় নিজেদের নিয়োজিত রাখবেন।

No comments:

Post a Comment